
সাম্প্রতিক সময়ে রাংগামাটির জুরাছড়ি উপজেলায় জেএসএসের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জুরাছড়ি উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসী জেএসএসের বাহিনী কর্তৃক চাঁদা উত্তলনের কাজ বেশ জোরেশোরেই চলছে। এতে সাধারণ জনগন পড়েছেন মহা বিপদে। উক্ত এলাকার বেশির ভাগ জনগন’ই হত দরিদ্র এবং দিন মজুর। এসব দরিদ্র জনগনের পক্ষে সীমিত আয়ের সাথে সাথে জেএসএস সন্ত্রাসীদের চাঁদা দেয়া অসম্ভ।
হত দরিদ্র দিন মজুর এবং জুরাছড়ি হতে রাংগামাটি ও অন্যান্য এলাকার একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম নৌকা(বার্মিজ বোট), জেএসএসের সন্ত্রাসী বাহিনীর চাপে এই নৌকা (বার্মিজ বোট) শ্রমিকরাও নৌকা চালাতে পারছেননা। ফলে দরিদ্র নৌকা চালক এবং দিন মজুরদের সংসার চালাতে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়াও পুরো জুরাছড়ি সহ অন্যান্য এলাকার যোগাযোগ ব্যাবস্থা চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। জরুরী খাদ্য সরবরাহ সহ জরুরি চিকিৎসা সেবার অভাবে অনেক রোগীকে অকালে মৃত্যু বরণ করতে হচ্ছে। আরো যারা অসুস্থ তাদেরকে মুমূর্ষু অবস্থায় নিয়ে যাচ্ছে জেএসএসের সন্ত্রাসী বাহিনীর কার্যকলাপ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় – জেএসএসের চাঁদার পরিমান আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গিয়েছে। আগে যা একটু আধটু দিয়ে বোঝানো যেত এখন টাকার পরিমান পূর্বের চেয়ে কয়েকগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়াও সকলের নিকট চাঁদা আদায় নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন সশস্ত্র হুমকি ধামকি অব্যাহত রেখেছে জেএসএসের সন্ত্রাসীরা। ফলে জন নিরাপত্তা ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। প্রানের ভয়ে কেও মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা।
স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায় যে- জেএসএস তার গন লাইনের গ্রাম/মহল্লা কেন্দ্রিক কমিটিকে আগের চেয়ে বহুগুন সক্রিয় করে তুলেছে যাতে জেএসএসের সকল অপতৎপরতা সটিকভাবে পরিচালনা করা যায়। এই গন লাইনের মাধ্যমেই চাঁদা নির্ধারণ ও চাঁদা আদায় নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে জেএসএস সন্ত্রাসীরা। গন লাইনের তথ্যের ভিত্তিতে অনেক নিরীহ জনগনকে শারিরিক নির্যাতন কিংবা প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করা হয়।
ব্যাবসায়ী মহলের সুত্র থেকে জানা যায় যে- বিগত দুই বছরে জুরাছড়ি জোনে সেনবাহিনীর তৎপরতায় চাঁদা আদায় করতে ব্যার্থ হয় জেএসএস সন্ত্রাসীরা কিন্তু ইদানিং তারা জোর পুর্বক পূর্বের ন্যায় চাঁদা আদায়ের চেষ্টা চালায়, স্থানীয় ব্যাবসায়ীরা তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে জেএসএস সন্ত্রাসীরা পরিবহন শ্রমিকদের হুমকির মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যাবস্থা বন্ধ করার চেষ্টা করে। যাতে করে ব্যাবসায়ীক লস হয় এবং স্থানীয় খাদ্য সরবরাহ ও চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হয়।
জেএসএসের উপরোক্ত বিভিন্ন কার্যক্রমের প্রেক্ষিতে জনজীবনে ব্যাপক আতংক বিরাজ করছে এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জুরাছড়ির সাধারণ জনগন।
পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে জুড়াছড়ি জোন কমান্ডার লেঃ কর্নেল জুলকিফলি আরমান বিখ্যাত পিএসসি,গেল ২৫ মে তারিখে স্থানীয় নৌকা ( বার্মিজ বুট) শ্রমিকদের সাথে দীর্ঘ আলোচনার পর তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সাপেক্ষে তারা পুনঃরায় নৌকা চালাতে রাজি হয় এবং সেনাবাহিনী তাদেরকে আশ্বস্ত করে বিধায় জুরাছড়ি এলাকার যাতায়াত ব্যাবস্থা স্বভাবিক হয়। এর পাশাপাশি অন্যান্য শ্রেনীর শ্রমিকরাও প্রান ভয়ে কাজে যোগদান হতে বিরত ছিল বিধায় তাদেরকে পূর্ন নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদানের আশ্বাস দেয়া হলে তারাও ধীরে ধীরে কাজে যোগ দিচ্ছে। এছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, হেডম্যান কারবারীদের সাথে বৈঠক করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সেনাবাহিনী।