দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে জোটগুলো যুদ্ধোত্তর সময় নিয়ে পরিকল্পনা শুরু করে। যদিও তখন কারও বিজয় দৃশ্যমান ছিল না। রাশিয়ার বিরুদ্ধে গত এক বছর ধরে লড়ছে ইউক্রেন। এখন একই ধরনের চিন্তা করা দরকার কিয়েভ ও পশ্চিমাদের।
রাশিয়ার ধারাবাহিক হামলার বিপরীতে ইউক্রেন এখনো ধুঁকছে। এই যুদ্ধের সমাধান হতে কয়েক মাস বা বছর লেগে যেতে পারে। যখন শান্তি ছড়িয়ে পড়বে অর্থাৎ যুদ্ধ বন্ধ হবে তখনও ইউক্রেনকে সতর্ক থাকতে হবে। বাড়াতে হবে নিরাপত্তা। কারণ ইউক্রেনের অস্তিত্বেই বিশ্বাস করে না রাশিয়া।
সত্য কথা বলতে মার্কিন জোটের অন্তর্ভুক্ত হলেও ইউক্রেন সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। যদিও আসন্ন বছরগুলোতে পশ্চিমাদের সমর্থন লাগবে ইউক্রেনের।
যুদ্ধ থেমে গেলেও পরিস্থিতি ঘোলাটে থাকবে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের লক্ষ্য স্পষ্ট। ইউক্রেনের ভূমি দখলে নিতে মরিয়া তিনি। দেশটির সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করেন না পুতিন। তাই সংঘাতের তীব্রতা কমলেও সুযোগ বুঝে ফের আগ্রাসন চালাতে পারে মস্কো।
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ন্যাটোর সদস্য হতে পারে ইউক্রেন। এতে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা পাবে দেশটি। তাছাড়া এই প্রতিশ্রুতিই ইউক্রেনকে দিয়ে আসছে পশ্চিমাজোট।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো জোটে প্রবেশ করা খুবই কঠিন। নিয়ম অনুযায়ী, কোনো সংঘাতময় দেশকে সদস্য করে না ন্যাটো। তাছাড়া কোনো নতুন সদস্যের সমস্যাও নিজেদের ওপর নেবে না জোট। সুতরাং যত দিনে যুদ্ধ বন্ধ না হয় অথবা ইউক্রেন থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার না হয়, তত দিন ইউক্রেনকে ন্যাটোর বাইরেই থাকতে হবে।
প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেরই নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। ন্যাটো চলে ঐক্যেরভিত্তিতে। যুদ্ধ যদি ফের শুরু হয়, তাহলে ৩০ সদস্যের ন্যাটোর সবাই যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে তাতে সন্দেহ রয়েছে। তাছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগেই বলেছেন, ইউক্রেনে তিনি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য লড়বেন না।
যদিও ন্যাটোর সদস্য হওয়ার যোগ্য ইউক্রেন। এরই মধ্যে দেশটি তাদের সাহস ও সক্ষমতার মাধ্যমে জোটের অন্যতম শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করে সেটার প্রমাণ দিয়েছে। কিন্তু বৈশ্বিক রাজনীতিতে যোগ্য হলেই সব কিছু ঠিক থাকে না।
ধারণা করা হচ্ছে, যুদ্ধ যখন শেষ হয়ে যাবে তখন সামরিক দিকে থেকে ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী দেশ হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে ইউক্রেন। সে সময় বিপুল সংখ্যক প্রশিক্ষিত সেনা থাকবে ইউক্রেনের। দেশটির সেনাবাহিনী সোভিয়েত আমলের মানদণ্ড পেরিয়ে এখন ন্যাটোর মতো হয়ে উঠবে। তাছাড়া দেশটির হাতে থাকতে পারে আধুনিক মানের সব অস্ত্র।
তাছাড়া পশ্চিমাদেশগুলো ইউক্রেনীয় বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও উপদেশ দিয়ে সহায়তা দিয়ে যাবে। অস্ত্র সরবরাহও চালিয়ে যেতে পারে।