
কানাইলাল দত্ত ১২৯৫ বঙ্গাব্দে ৩১ আগস্ট চন্দননগরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম চুনীলাল দত্ত ও মাতার নাম ব্রজেশ্বরী দেবী। পিতা বোম্বাইতে হিসাবরক্ষকের কাজ করতেন। কানাইলাল শৈশবে বোম্বাইয়ের গিরগাঁও এরিয়ান এডুকেশন সোসাইটি স্কুলে এবং পরবর্তী সময়ে চন্দননগর ডুপ্লে বিদ্যামন্দিরে (বর্তমান কানাইলাল বিদ্যামন্দির) অধ্যয়ন করেন। ১৯০৮ সালে হুগলি মহসীন কলেজ থেকে বি.এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও বিপ্লব ও রাজদ্রোহিতার অভিযোগে কারারুদ্ধ হওয়ায় ইংরেজ সরকার তাকে ডিগ্রি প্রদানে বাধা দেয়, কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সে বাধা উপেক্ষা করে তাকে ডিগ্রি প্রদান করে।
চন্দননগরের ডুপ্লে কলেজের অধ্যক্ষ চারুচন্দ্র রায়ের কাছে কানাইলাল বিপ্লবমন্ত্রে দীক্ষা নেন এবং অস্ত্রচালনা শিক্ষা করেন। চন্দননগরে স্বীয় চেষ্টায় অনেকগুলি বিপ্লবী সমিতি গড়ে তোলেন। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় চাকরিচ্যুত বাঙালি কেরাণীদের জন্য স্বদেশী সাহায্যভাণ্ডার গড়ে তোলেন। বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর সাথে ছাত্রাবস্থাতেই ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল তার। বি.এ. পরীক্ষা দিয়ে কলকাতার বিপ্লবী দলের কার্যকলাপে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। কিংসফোর্ডকে হত্যা করার জন্য তিনি প্রথমে মনোনীত হয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে মতিলাল রায় লিখেছেন –
গঙ্গাতীরে পদচারণা করিতে-করিতে কানাইলাল আমায় জানাইল-. তাহার ডাক আসিয়াছে, তাহাকে বাড়ী ছাড়িতে হইবে। | আমি সবিস্ময়ে তাহার মুখের দিকে চাহিলাম। দীর্ঘ নাসিকা। দুটি ওষ্ঠপুটের ফাঁকে হাসির জ্যোৎস্না ঠিকরাইয়া বাহির হইতেছে।কানাইলাল স্মিতমুখে বলিল “উপস্থিত কলিকাতায় যাইব। পি-এম. করার খাঁটী লােকের অভাব হইয়াছে।…আমি প্রাণের চেয়ে পি.এম্. যাহাতে কার্য্যকর হয়, সেই দিকেই বিপ্লবীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করিব।”
কিংসফোর্ড হত্যার চেষ্টায় কানাইলালের পরিবর্তে প্রফুল্ল চাকীর সঙ্গে ক্ষুদিরাম বসু মজঃফরপুর যাত্রা করেন। তখন কানাইলাল বারীন ঘোষের দলের সঙ্গে কলকাতায় বোমা তৈরির কাজে যোগ দেন। ১৯০৮ সালের ২ মে তিনি উত্তর কলকাতার ১৫ নম্বর গোপীমোহন দত্ত লেন থেকে মানিকতলা বোমা মামলায় অস্ত্র আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন।
Discussion about this post