গত ১৭/১০/২০২০ ইং তারিখ সকাল ১০ টার সময় চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া থানাধীন মনসা আইডিয়াল স্কুলের পূর্ব-উত্তর পার্শ্বে ব্রীজ সংলগ্ন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে একটি অজ্ঞাতনামা পুরুষ বয়স অনুমান ৩০ বছর এর লাশ দেখা যায়,এসময় এলাকার লােকজন স্থানীয় পটিয়া থানায় বিষয় টি জানায়, থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করেন।
ঘটনাস্থলে পিবিআই টিম উপস্থিত হয়ে অত্যাধুনিক “ফিঙ্গার প্রিন্ট আইডেন্টিফিকেশন এন্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেম” এর মাধ্যমে ভিকটিমের পরিচয় উদ্ঘাটনে সক্ষম হয়। এই সংক্রান্তে ভিকটিমের ভাই মােঃ কবির হােসেন বাদী হইয়া পটিয়া থানায় সূত্রে বর্ণিত মামলাটি দায়ের করেন।
পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ড মামলার গুরুত্ব বিবেচনায় গত ২২/১০/২০২০ খ্রিঃ মামলাটি স্ব-উদ্যোগে তদন্তভার অধিগ্রহণ করে এবং পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মােহাম্মদ মনির হােসেনকে তদন্তকারী
কর্মকর্তা নিয়ােগ করা হয়। তিনি এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ড মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে বিশ্বস্ত গুপ্তচর নিয়ােগ এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরলসভাবে মামলার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন।
পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএম এর সার্বিক দিক নির্দেশনা এবং পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান এর নিবিড় তত্ত্বাবধানে তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মােহাম্মদ মনির হােসেনের নেতৃত্বে পিবিআই এর একটি টিম গতকাল (৭ আগস্ট) রাত ১২:৩০ টার সময় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে উক্ত হত্যাকান্ডের মাষ্টার মাইন্ড এজাহারনামীয় ১নং আসামী-আশরাফুল হক প্রকাশ সাব্বির (২৩) এবং তদন্তে প্রাপ্ত ২নং আসামী শিউলী বেগম (৪৫), স্বামী-আনােয়ার হােসেন, উভয় সাং-ছাগাইয়া, মােল্লা বাড়ী, থানা-ভৈরব, জেলা-কিশােরগঞ্জ’দ্বয়কে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার আশুগঞ্জ থানাধীন সােহাগপুর এলাকা হইতে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামী সাব্বির (২৩) এর পিতা প্রবাসে থাকার সুবাধে তাহার মা শিউলি বেগমের সাথে তার দূর সম্পর্কের চাচা ভিকটিম নবী হােসেন (২৮) এর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং তারা পালিয়ে বিয়ে করে।
সেই কারনে আসামী আশরাফুল হক প্রকাশ সাব্বির ভিকটিম নবী হােসেনকে হত্যা করার নীল নকশা তৈরি করে।পরিকল্পনা মােতাবেক ইতিপূর্বে গ্রেফতারকৃত আসামী আশিক ও সুমন সহ অপরাপর আসামীরা ভিকটিম নবী হােসেনকে গত ১৫/১০/২০২০ ইং তারিখ রাতে হাইচ মাইক্রোবাস নং-ঢাকা মেট্রো-চ-৫৩-১৪০৮ গাড়ীযােগে অপহরণ করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে গত ১৬/১০/২০২০ ইং তারিখ সকাল বেলায় কৌশলে পুনরায় অপহরণ করতঃ হত্যার উদ্দেশ্যে প্রাইভেটকার নং-ঢাকা মেট্রো-গ-২৯-৪২৪৯ যােগে চট্টগ্রাম অভিমুখে রওয়ানা করে।
কুমিল্লা এলাকার মহাসড়কে তাদের চলন্ত প্রাইভেটকারে ভিকটিম নবী হােসেনকে গামছা দ্বারা মুখ বাঁধে গলা টিপে হত্যা করেন, পায়ের রগ কাটিয়া মৃত্যু নিশ্চিত করে এবং মৃত লাশ সিটের পাশে গামছা দ্বারা ঢেকে রাখে। এরপর চট্টগ্রামের কর্ণফুলি নতুন ব্রীজ পার হয়ে পটিয়া থানাধীন মহাসড়কের পার্শ্বে নির্জন স্থানে লাশ ফেলে খুনিরা কক্সবাজার চলে যায়।
কক্সবাজার থেকে ভৈরব ফেরত যাওয়ার পর হত্যার পরিকল্পনাকারী সাব্বির গাড়ী ভাড়া বাবদ ১৫,০০০/- টাকা এবং খুনের জন্য পূর্বের কন্ট্রাক্ট মােতাবেক ৬০,০০০ টাকা আসামী তুষারকে পরিশােধ করে।সেখান থেকে তুষার সুমনকে ১৭,০০০/- এবং আশিককে ১৮,০০০/- টাকা প্রদান করে এবং তুষার নিজে ২৫,০০০/- টাকা রাখে।
আজ ৮ আগস্ট হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী গ্রেফতারকৃত আসামী আশরাফুল হক প্রকাশ সাব্বির ও তদন্তে প্রাপ্ত আসামী শিউলী বেগমদ্বয়কে যথাযথ পুলিশ স্কটের মাধ্যমে বিজ্ঞ আদালতে সােপর্দ করলে তারা বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারা মােতাবেক স্বীকারােক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনার সহিত সম্পৃক্ত পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের নিমিত্তে অভিযান অব্যাহত আছে। মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম চলমান আছে।