মায়াবী হরিণ দেখে, বাঘ খুঁজে, বানর ও কুমিরের সঙ্গে লুকোচুরি খেলা দেখে সময় কাটাচ্ছেন অনেকেই । আবার কেউ কেউ নির্জন বনের সৈকতে গোসল ও সাঁতার কেটে নির্মল আনন্দ উপভোগ করছেন। শুক্র-শনিবার (২ ও ৩ সেপ্টেম্বর)ছুটির দিন হওয়ায় অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে এসেছেন জীববৈচিত্রে ভরপুর পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে দীর্ঘ ৩ মাসের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর করমজল, কটকা, কচিখালী, পক্ষীর চর, ডিমের চর, তিনকোনা, হারবাড়িয়া, কোকিলমোনি, হিরণপয়েন্ট, দুবলারচর ও আলোরকোলে হাজারো পর্যটক ভিড় করছেন দিন-রাতে।
রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা হরিণ, কুমিরসহ নানা স্থল ও জলজ প্রাণীর আশ্রয়স্থল এই বন। সুন্দরবনের মৎস্য প্রজনন মৌসুমের জন্য গত ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সব ধরনের মাছ আহরণ বন্ধের পাশাপশি পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়াও হয়।
তিন মাস বন্ধ থাকার পর সুন্দরবন উন্মুক্ত হওয়ায় ভ্রমণ পিপাসুদের স্বাগত জানাতে নতুনভাবে সাজানো হয়েছে লঞ্চ ও অন্যান্য নৌযান। আর প্রস্তুত বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রসহ অন্যান্য স্পটও। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এবার পর্যটক সংখ্যা দুই থেকে তিনগুণ বাড়ার আশা করছে বনবিভাগ। তাতে বাড়বে রাজস্ব। একই সঙ্গে বনজীবীরাও পাস নিয়ে ঢুকছেন সুন্দরবনে।
অপরূপ সৌন্দর্যের আঁধার বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই ম্যানগ্রোভ বন যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে দর্শনার্থীদের। রোমাঞ্চকর ভয় আর শিহরণ, সঙ্গে প্রকৃতির নৈসর্গিকতা মুগ্ধ করে যে কাউকে।
করমজল, হারবাড়িয়া, দুবলা, কটকা, কচিখালী, নীলকমলসহ সমুদ্র তীরবর্তী ও বনাঞ্চলের সবকটি পর্যটক স্পট দর্শনার্থীদের জন্য আকর্ষণীয়ভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। বিশ্ব ঐতিহ্যের এ বনে স্বাগত জানাতে ট্যুর অপারেটর, লঞ্চ মালিকরা নতুনভাবে সাজিয়েছেন লঞ্চ ও অন্যান্য নৌযান। আর দীর্ঘ অপেক্ষার পর ভ্রমণের সুযোগ পাওয়ায় দারুণ উচ্ছ্বসিত পর্যটকরা।
পদ্মা সেতুর কারণে ভ্রমণ সহজ হওয়ায় আশার আলো দেখছেন ট্যুর ব্যবসায়ীরা। এবার পর্যটক সংখ্যা দুই থেকে তিনগুণ বাড়ার সম্ভাবনা দেখছে বনবিভাগ। এতে বাড়বে রাজস্ব আয়ও।
ছুটিতে ঢাকা থেকে সহকর্মীদের নিয়ে ঘুরতে আসা হাসান করিম নামে এক পর্যটক বলেন, সুন্দরবনের সৌন্দর্য দেখে অভিভূত হয়েছি। দেশের অন্য দর্শনীয়স্থানগুলোর চেয়ে সুন্দরবন ভ্রমন একটু আলাদা। লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকায় করে সুন্দরবন ভ্রমন করে বেশ আনন্দ পেয়েছি।
করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, সুন্দরবন খুলে দেওয়ার খবর পেয়ে পর্যটকরা পরিবার নিয়ে ছুটে আসছেন এখানে। বনে পর্যটকদের আগমন প্রতিদিনই বাড়ছে। শুক্র ও শনিবার সবচেয়ে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।