
পূর্ণাঙ্গ একটি টিভি চ্যানেলের সরকারি সুবিধা ভোগ করছে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র। এই কেন্দ্র থেকে ধর্মীয় ও জাতীয় দিবসগুলোতে বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানের সম্প্রচার করা হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু জিএম ও তাঁর অধীনস্থ সাঙ্গপাঙ্গদের কারণে এবার বিশাল একটি প্রশ্নবোধক চিহ্নের স্বাক্ষর পড়ে গেছে।
খবরে প্রকাশ – ঈদুল ফিতরের বিশেষ অনুষ্ঠানগুলোতে অমুসলিম শিল্পীদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। অথচ নিয়মানুযায়ী অমুসলিম শিল্পী থাকারই কথা নয়। হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টানদের প্রধান উৎসবের কোনও অনুষ্ঠানে কখনোই একজন মুসলিম শিল্পীকে রাখা হয়নি। তাহলে এবার কেন ব্যত্যয় হলো? উত্তর খুব সহজ – বর্তমান জিএম নিতাই চন্দ্র ভট্টাচার্য তাঁর পূর্বসূরি মনোজ সেনগুপ্তের রেখে যাওয়া দুর্নীতিবাজদের নিয়েই এমন প্রশ্নবোধক প্রোগ্রাম সাজিয়েছেন – এমন অভিযোগ প্রায় সব সিনিয়র শিল্পীদের।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন সিনিয়র সঙ্গীত পরিচালক মুন্না ফারুক, নাজমুল আবেদিন চৌধুরী, শংকর দে, মোহাম্মদ হোসেন ও চট্টগ্রাম বেতার ও টেলিভিশন শিল্পী কল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন তাহের। তাঁরা বলেন -“ঈদকে সার্বজনীন উৎসব হিসেবে চিহ্নিত করে দায়সারা জবাব দিয়েছেন জিএম, কিন্তু আমাদের প্রশ্ন – কখনো কী তিনি অমুসলিমদের ধর্মীয় উৎসবের অনুষ্ঠানে কোনও মুসলিম শিল্পীকে রেখেছিলেন?”
এই রিপোর্ট তৈরি করার জন্য জিএমকে কল দেয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। অগত্যায় তাঁর অধীনস্থ একজনকে ফোন করা হলে তিনিও নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিবেদককে বলেন – “এখানে আমাদের কিছু করার নেই, সবকিছু হয় জিএম স্যারের ইচ্ছে মতো।” ঈদের অনুষ্ঠানে মুসলিম শিল্পীদের এতো কম নেয়া হলো কেন জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন – “আসলে মুসলিম শিল্পীদের পারফরম্যান্স খুব ভালো না।” এমন উত্তরে বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করা হয় -“তাহলে তাদেরকে এনলিস্টেড করলেন কেন?” উত্তর দিতে গিয়েও একইভাবে জিএমের কথা বললেন তিনি।
তথ্য পাওয়া গেছে – সাবেক জিএম মনোজ সেনগুপ্তের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছিলো, সে মামলার দ্বিতীয় অভিযুক্ত সুকুমার বিশ্বাসকে নিয়েই জিএম নিতাই চন্দ্র ভট্টাচার্য সব প্রোগ্রাম সেটিং করে থাকেন। সুকুমার একজন প্রশাসনিক কর্মচারী মাত্র। মনোজ সেনগুপ্ত তাকে পিএস বানিয়েছিলেন। কিন্তু শিল্পীদের অভিযোগের কারণ সে পিএস পদ থেকে অব্যাহতি পায়। পরবর্তীতে নিতাই চন্দ্র ভট্টাচার্য তাকে আবারও অনুষ্ঠান শাখায় নিয়ে আসেন প্রশাসনিক সেক্টরে লোকবলের সংকট থাকা সত্ত্বেও। এই সুযোগে সুকুমার শিল্পী ও যন্ত্রী ঠিক করে উৎকোচ নেয়ার বিনিময়ে।
বঞ্চিত শিল্পী ও যন্ত্রীদের প্রশ্ন – সুকুমারের খুঁটির জোর কোথায়? জিএম নিতাই বাবুই বা কেন একজন অভিযুক্ত দুর্নীতিবাজকে সর্বেসর্বা বানিয়ে রাখলেন?
সিনিয়র সঙ্গীত পরিচালক শংকর দে সরাসরিই বললেন -“নিতাই বাবুও মনোজ সেনগুপ্তের মতোই একজন কট্টর সাম্প্রদায়িক মানুষ। তারা দু’জন চট্টগ্রামের শিল্পীদের মনে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিচ্ছে। আমরা শিল্পের সৌকর্য রক্ষায় এর একটা বিহিত চাই।
Discussion about this post