
বুধবার (১ মার্চ) বিকাল ৩টায় মানিক মিয়া এভিনিউয়ে এক মানববন্ধন থেকে মোটরসাইকেল চলাচল নীতিমালার খসড়ায় অনেক অসঙ্গতি রয়েছে দাবি করে এটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন রাজধানীর বাইকাররা।
দাবি আদায়ে ৫ মার্চ বিআরটিএ চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার কথা জানিয়ে ঢাকার বাইকাররা বলেছেন, প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী বরাবরও স্মারকলিপি পেশ করা হবে। তিনি সবকিছু পর্যালোচনা করে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নিবেন বলে তাদের প্রত্যাশা। যা তরুণ সমাজ তথা তরুণ উদ্যোক্তাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে উদ্বুদ্ধ করবে।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে মোটরসাইকেল চলাচলের খসড়া নীতিমালার বিরুদ্ধে বাইকাররা বলেন, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে ঈদ ও অন্যান্য উৎসবে অর্থনীতির চাকা অনেক গতিশীল থাকে। সেক্ষেত্রে যদি এই সময় মোটরসাইকেল চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, তবে তা সামগ্রিক অর্থনীতি তথা ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগ সম্প্রসারণে বাধা সৃষ্টি করবে। এসব বিষয় পর্যালোচনা করতে সরকার তথা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
মোটরসাইকেল চালকদের জন্য নীতিমালাটি ‘সাংঘর্ষিক ও অবাস্তব’ উল্লেখ করে তাদের ভাষ্য, ‘সড়কে সাইকেল বা রিকশার গতি ঘণ্টায় ২০-২৫ কিলোমিটার। মোটরসাইকেলের মতো একটি বাহনের সর্বোচ্চ গতি ৩০ কিলোমিটার কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। ঢাকার চালকরা মোটরসাইকেল ব্যবহার করেন সময় বাঁচানোর জন্য। এখানে গতিসীমা ৩০ কিলোমিটার হলে লাইসেন্স করে এবং বছর বছর কর দিয়ে মোটরসাইকেল চালানোর কোনও যুক্তি নেই।
তারা বলছেন, মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীদের একটি বড় অংশই তরুণ উদ্যোক্তা, যারা সাধারণত ১২৫ সিসি অথবা তার কম সিসির ক্ষমতাসম্পন্ন মোটরসাইকেল ব্যবহার করে। সেক্ষেত্রে মহাসড়কে যদি ১২৫ সিসি ক্ষমতার মোটরসাইকেল চলতে দেওয়া না হয় তা তরুণ উদ্যোক্তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করবে, যা আমাদের অর্থনীতির অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করবে।
জানা গেছে, মোটরসাইকেল চলাচল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস করতে, নিরাপদ ব্যবহার ও অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ বাইক ব্যবহারে উৎসাহিত করতে এবং চালকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে একটি নীতিমালা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে ‘মোটরসাইকেল চলাচল নীতিমালা-২০২৩’ নামে একটি খসড়াও করা হয়েছে। এতে স্কুটির প্রসার ঘটানো এবং স্পোর্টির ব্যবহার কমানোর কথা বলা হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম সচিব আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের কমিটি খসড়া নীতিমালাটি তৈরি করেছে। এতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতর ও পুলিশের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। এটি বাস্তবায়নে বিভিন্ন নির্দেশনা উল্লেখ করা হয়েছে, যা শিগগিরই চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।