
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর ঘিরে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে গতি আসবে এ আশা করছেন তারা।
ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে, যা কূটনৈতিক বাঁধনের ঊর্ধ্বে বলেও অনেকের অভিমত। এই সম্পর্ক বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষ আন্তর্জাতিক বিধি নিষেধের গন্ডি ভুলে বাংলাদেশের উদ্বাস্তু মানুষদের জায়গা করে দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক গাঢ় থেকে গাঢ়তর হয়েছে, সেই সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক এগিয়ে গিয়েছে। যার ফল পশ্চিমবঙ্গসহ দেশের অন্যান্য রাজ্যের ব্যবসায়ী মহল পেয়েছেন।
ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের আত্মিক সম্পর্ক থাকলেও সেই তুলনায় ব্যবসায়িক সম্পর্ক সারা দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগোয়নি। যার ফলে অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে রয়েছেন রাজ্যের ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোগী মহল। এই নিয়ে তাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে। তবে বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব, রাজ্যের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যর সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের চেষ্টা এবং বর্তমান কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের উদ্যোগের ফলে ধীরে ধীরে এ ব্যবধান কমছে।
বাংলাদেশের ব্যবসায়িদেরও অভিমত ত্রিপুরার ব্যবসায়ী মহল যদি উপকৃত হন তাতে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরাও লাভবান হবেন।
ইতিমধ্যে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসায়ী সংক্রান্ত বিভিন্ন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর ফলে একদিকে যেমন ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠী বাংলাদেশে এসে শিল্প কারখানা স্থাপন করছেন, তেমনি বাংলাদেশের বেশ কিছু শিল্পগোষ্ঠী ইতোমধ্যে ভারতে তাদের কারখানার ইউনিট স্থাপন করেছেন। বাংলাদেশের শিল্প উদ্যোগীরা ভারতের অন্যান্য রাজ্যে তাদের ইউনিট স্থাপন করতে পারলেও ত্রিপুরায় ইউনিট স্থাপনে অনুমোদন পাচ্ছেন না। এজন্য তাদের বিশেষ অনুমতি নিতে হয়, সব ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়া হয় না। তাই বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের জন্যও এক্ষেত্রে সরলীকরণ হওয়া প্রয়োজন। এতে দেশ তথা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষও উপকৃত হবেন প্রত্যাশা এ দেশের ব্যবসায়ী মহলের। তাই বাণিজ্য ঘাটতি দূরীকরণে বাংলাদেশের আপামর বাণিজ্য প্রতিনিধিদের প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর হোক বাণিজ্যের অবাধ মেলবন্ধন রচনার পথ।